আমার জীবন আমিই সাজাবো ( বালিকাদের প্রতি – ডা. মিম্ মি

আমার জীবন
আমিই সাজাব
_____________________________

কেউ একজন টগবগ টগবগ ঘোড়ায় চড়ে ছুটে এসে আমার জীবনটা বদলে দিবে — এই জাতীয় ফিল্মী দিবা স্বপ্ন এই 2018 তে এসে যে সব বালিকারা দেখছেন তাদের জন্য বস্তা বস্তা সমবেদনা।

একমাত্র হুমম, মনে রাখবেন শুধুমাত্র আব্বু ছাড়া আর একজন পুরুষও আপনি পাবেন না জীবনে যে আপনাকে রাজকন্যার মতো ট্রিট করবে।যদি আপনি দুদার্ন্ত ভাগ্যবতী হন সেটা অবশ্য ব্যতিক্রম।আব্বু যদি দিনমজুরও হয় তবুও তার কাছে আপনি ই তার রাজকন্যা সারাজীবনের জন্য।যতই ভুলই জীবনে আপনি করুন না বাবা কখনোই ফেলে দিবে না আপনাকে।বলবে না এইটা তোমার বাড়ি না, বের হয়ে যাও বাসা থেকে।নিজে কষ্ট পেলেও আপনার জীবনটা গুছিয়ে দেবার সর্বোচ্চ চেষ্টা শুধুমাত্র বাবা’ই করে।

আপনার জীবন যদি কোন পুরুষ বদলে দিতে পারে তা শুধুমাত্র বাবা ই পারে।আর যত পুরুষ ই আপনার জীবনে আসুক না কেন কোন না কোন স্বার্থ তাতে জড়িয়ে থাকবে।কেউ চাইবে আপনি তার ঘর বাড়ি ফার্নিচার পাহারা দিবেন, সন্তান কে ধারন এবং লালন পালন করবেন।সম্পর্কে ভালোবাসা থাকুক না থাকুক।
কেউ আপনার সাথে ফ্লার্ট করবে যাতে আপনি তার মর্নিং এলার্মের কাজটা করে দেন।ঘুম থেকে তুলে তার দিনটা শুরু করিয়ে দেন।কেউ চাইবে আপনাকে তার রিডিং পার্টনার হিসেবে।যাতে তার একাডেমিক শিক্ষাটাকে আপনি টেনে নিয়ে যান।কেউ চাইবে আপনি তার সাথে মধ্যরাতে চ্যাট করে তার উইকেন্ডগুলো আনন্দে ভরিয়ে তুলুন।একটু সাহসীরা চাইবে আপনি তার সাথে লংড্রাইভে যান।হ্যাং আউটে ফ্লাই করুন হেথা ওথা।নিদেনপক্ষে লিটন ভাইয়ার ফ্লাটে তো যেতেই পারেন আপনি তার শারীরিক বেথা বেদনা ক্লান্তি ক্ষুধা কমাতে।কিন্তু কথা হচ্ছে আমি বা আপনি তো কোন খাবার না।তাই না ? মনে রাখা দরকার ঐসব হাবিজাবি ক্ষুধা শুধু ছেলেদের না মেয়েদেরও যথেষ্ট পরিমাণেই লাগে যদি মেডিকেলের ভাষায় মেয়েটি Frigidity তে আক্রান্ত হয়ে না থাকে।ছেলেরা ইম্পোটেন্ট(Impotent/ অক্ষম) হতে পারে মেয়েদের ক্ষেত্রে তার সুযোগ কম।কিন্তু কথা হচ্ছে অন্যের প্রয়োজনে কেন আমরা ব্যবহৃত হব ? নিজে যদি দরকার মনে করি আমারও শারীরিক ক্ষুধা তৃষ্ণা মেটানোর প্রয়োজন তাহলে সমাজ স্বীকৃত পথেই এগুনো হচ্ছে রিষ্ক ফ্রি এবং সম্মানের।আর আমাদের সবথেকে বড় শক্তি হচ্ছে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাই এমনভাবে আমাদের শারীরিক কাঠামো সৃষ্টি করেছেন যে আমাদের সেলফ কন্ট্রোল পাওয়ার কিন্তু সেই লেভেলের।সুতরাং আমাদের তো চিন্তিত হবার একদম কিচ্ছু নেই।বরং মেয়ে হিসেবে জন্ম নিয়েছি বলে কামিজের কলারটা একটু ঝাঁকি আমরা দিতেই পারি।হুমম।

শোনেন কইন্যারা, ছেলেদের এত ঠেকা পরে নাই যে নিজের জীবন বাদ দিয়ে আপনার/আমার জীবন সাজাতে লাগবে।
আর সব থেকে বড় কথা যেই যুগ এসেছে ছেলেদের নিজের জীবন ই তো এলোমেলো ছন্নছাড়া দেখছি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই।স্হিরতা, ম্যাচিউরিটি খুব কম ছেলের মাঝে দেখা যায়।মাথা গরম, ধৈর্যহীন, শর্ট টেম্পারড, পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের দোটানা, অপরিকল্পিত ক্যারিয়ার প্ল্যানিং এসব অ-গুনেই ঢেকে যেতে দেখছি আশেপাশের ছেলেদেরকে।
ওরা কি সাজিয়ে দিবে আমার আপনার জীবন বলুন তো ?

বরং নিজের জীবনটা নিজেকেই সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে হবে।এর সাথে কোন রকম কম্প্রোমাইজ চলবে না কিছুতেই।আমাদের মতো খুব সাধারণ মেয়েগুলোর জীবন সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে হলে এ কি করতে হবে জানেন ? মাত্র একটা কাজ মন দিয়ে করলেই চলবে।কষে লেখাপড়া করতে হবে বয়সকালে।যতই ছেলেদের নাচান আর নিজে নাচেন কোন সমস্যা নেই যদি একাডেমিক সার্টিফিকেট ঠিকঠাক মত জমতে থাকে (এটি মজা করে বললাম।কি দরকার অপাত্রের সাথে নাচানাচি করে সময় নষ্ট করার?)।

পায়ের নীচে শক্ত মাটি এবং মাথার উপরে ছাদ এবং তিনবেলা পেটপুরে খাবারের ব্যবস্থা এবং পাশাপাশি টুকটাক ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স থাকলে দেখবেন দুনিয়া পুরাই রঙ্গীন।সেই সাথে পাশে চলার জন্য যদি একজন শারীরিক মানসিক সামাজিক ভাবে সাউন্ড এবং ব্যালেন্স পার্টনার পাওয়া যায় সে তো বিশাল প্রাপ্তি হয়ে যাবে নিঃসন্দেহে।আর যদি কোন কারনে মি.রাইটের দেখা না মিলে চলার পথে ইটস ওকে আমরা অপেক্ষা তো করতেই পারি।যদি সৃষ্টিকর্তা
মিম্ মি’র/আপনার ডান পাশে চলার জন্য কাউকে সত্যিই সৃষ্টি করে থাকেন অবশ্যই কোন না কোন একদিন ঠিক দেখা হয়েই যাবে, লুকিয়ে সে থাকবে আর কতদিন ? জীবনে সে আসার আগে যেন বারংবার ভুল মানুষের হাতে হাত রেখে জীবানুনাশক লাইফবয় সাবার দিয়ে হাত ধুতে ধুতে হাতের চামড়া খসখসে করে না ফেলি আমি/আপনি।
.
.
#মিম্ মি
এম বি বি এস. সি সি ডি
এম পি এইচ

Related posts

Leave a Comment