একটি বোর্ডিং স্কুল
(রোজা এবং একটি বোর্ডিং স্কুল)
____________________
(১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
(২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
(পর্ব–তিন)
হঠাৎ করেই নিখোঁজ হলো অর্পণ বোর্ডিং স্কুল থেকে।
গত মাসেই সে ভর্তি হয়েছিল ICIS এর গ্রেড ফাইভে। ঘটনাটা ঘটেছে রাত আটটা থেকে নয়টা মধ্যে। অর্পণকে শেষ দেখা গেছে ডাইনিং হলে ডিনার করতে। ডিনার টাইম সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত। আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত গ্রেড ফাইভ আর সিক্সের রিহার্সেল ছিল অডিটোরিয়ামে। ড্রামা টিচার মিস রনিতা এবং বাংলা টিচার মি. ফারশাদের তত্ত্বাবধানে ড্রামা রিহার্সেল চলছিল তখন আসন্ন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে।
অডিটোরিয়ামে কেউ দেখেনি অর্পণকে। কিন্তু তখনো কেউ ঘটনাটা ধরতে পারেনি। ঘটনা ধরা পড়ল রাত সাড়ে দশটাতে নিউট্রিশন নেবার পরে সব বোর্ডাররা যখন ল্যাপটপ ডর্ম সুপারের রুমে সাবমিট করছিল তখন। অর্পণের হাউজ মাষ্টার স্কুলের জুনিয়র ফুটবল কোচ স্পোর্টস টিচার মি.তমাল প্রথম নোটিশ করলেন অর্পণ ল্যাপটপ সাবমিট করতে আসেনি। অর্পণের দুই রুমমেট জনি এবং সাজিদকে জিজ্ঞেস করলে ওরা জানালো ডিনারের পর থেকে ওরা দেখেনি অর্পণকে।
মি. তমাল দ্রুত পৌঁছে গেলেন স্কুলের বয়েজ ডরমেটরির তিন তলাতে। ওনার উপর দায়িত্ব ডি ব্লকের। উনি ব্লক সি এবং ডি এর হাউজ মাষ্টার। রুম নম্বর 303 তে ঢুকে দেখলেন রুম ফাঁকা। তিনজন বোর্ডারের কেউ নেই রুমে। ঝটপট ওয়াশ রুমে উঁকি দিয়ে দেখলেন ফাঁকা। সাথে সাথে দ্রুত মোবাইল হাতে নিয়ে স্কুলের ফ্যাকাল্টি, সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম, ডর্ম মাষ্টার, হাউজ মাস্টারদের হোয়াটস এপ গ্রুপে টেক্সট করলেন — urgent. Student missing.
এরপর কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন লাগালেন ডীনের নম্বরে। জানালেন অর্পণ কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ডীন দশ মিনিটের মধ্যে সমস্ত ডর্ম মাষ্টার, হাউজ মাষ্টার, সিকিউরিটি ইন চার্জ, ডর্ম সুপারভাইজারদেরকে একাডেমিক ভবনে স্কুলের টিচার লাউন্জে হাজির হতে বললেন। জরুরী মিটিং।
আমার কাছেও টেক্সট এলো। এত রাতে ইমার্জেন্সি না হলে মিটিং হবার কথা না। তখন পর্যন্ত আমি ঘটনা জানি না। অন্যান্য দিনের মতো ডিনারের পর রাতে যাদের ওষুধ পাবার কথা ,কেউ অসুস্থ কিনা ইত্যাদি রুটিন ভিজিটে গার্লস আর বয়েজ ডর্মে ডিউটি শেষে কোয়ার্টারে ফিরে শাওয়ার শেষ করে মাত্রই এক পেয়ালা কফি হাতে নিয়ে জঙ্গলের দিকের বারান্দায় বসেছি — আজ জ্যোস্না রাতে সবাই গেছে বনে লো ভলিউমে ছেড়ে । আর সাথে সাথেই টুংটাং শুরু হলো ফোনে।
ঝটপট হাউজকোট চাপিয়ে ছুটলাম লাউন্জে। যেতে যেতে দেখা ইংরেজি লিটারেচারের টিচার মি. ম্যানিনের সাথে। তার মুখ থেকেই প্রথম শুনলাম ঘটনাটা।
লাউন্জে পৌঁছে দেখি স্কুলের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সবাই উপস্থিত। সবার চোখে মুখে অস্থিরতা স্পষ্ট। ডিন, কোঅর্ডিনেটর, এইচারের সবাই ব্যস্ত ফোনে। বুঝলাম লোকাল থানা, হেড অফিসে কথা বলছে তারা। আমাকে দেখা মাত্রই প্রিন্সিপাল বললেন— ডক্টর তুমি দ্রুত লোকাল হাসপাতালে কন্ট্রাক্ট কর। সরাসরি বলার দরকার নেই বাচ্চা মিসিং।জাষ্ট জানার চেষ্টা কর কোন বাচ্চা রাতে সেখানে গিয়েছে কিনা।
আমার পরিচিত এক সিনিয়র ভাইয়া আছেন মেডিকেল অফিসার হিসেবে লোকাল হাসপাতালে। আমাদের এখানকার অনেক ইমার্জেন্সি কেস নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছি। ভাইয়া খুবই হেল্পফুল। নক দিলাম। ভাইয়া জানালেন — না আজ বিকেলের পর হাসপাতালে কোন এডমিশন হয়নি। যদি রাতে তেমন কিছু হয় আমাকে জানাবেন।
সবার অবস্থা খুবই খারাপ। সকালের আগে যদি অর্পণকে খুঁজে পাওয়া না যায় কি হবে আমরা কেউই তা ভাবতে পারছিলাম না। এই বাচ্চাগুলো আমাদের দায়িত্ব। মা বাবারা আমাদের ভরসাতে এখানে রেখে যায় ওদের এর আগে কখনোই এই স্কুলে এরকম ঘটনা ঘটেনি। এখানে সিকিউরিটি ব্যবস্থা খুবই ভালো। প্রতিটা পয়েন্ট সিকিউরিটি গার্ড চব্বিশ ঘন্টা অন ডিউটিতে থাকে। সিসি ক্যামেরা প্রতিটি এন্ট্রিতে রাখা।
আইটি ডিপার্টমেন্ট বসে গেছে সিসি টিভি ফুটেজ চেক করতে।মেইন গেট দিয়ে কোনভাবেই কার্ড পান্চ এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচ না করে ঢোকা এবং বের হওয়া সম্ভব না।
বাংলাদেশের গহীন এক অরণ্যে পাহাড়ে ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে অবস্থিত এই বোর্ডিং স্কুলটি। গত তিন বছর ধরে আমি এখানে জব করছি আবাসিক চিকিৎসক হিসেবে। স্কুলের বাচ্চারা হচ্ছে এখানকার প্রাণ। তাদের কলকালকিতে মুখরিত হয়ে থাকে এই নির্জন পাহাড়ি বন। বাচ্চাদেরকে টানেই পড়ে আছি এখানে। নাহলে কবে পালাতাম।
প্রিন্সিপালের সাথে আমার সম্পর্ক খুব একটা ভালো না। উনি ভারতের চণ্ডীগড়ের মানুষ। ওনার মাঝে ডমিনেটিং টেন্ডেন্সি প্রবল। সবাইকেই ওনার ছাত্র ভাবতে পছন্দ করেন। তাতে সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে উনি নিজের লিমিট ভুলে যান।কোথায় থামতে হবে তা জানেন না। একেবারে শুরু থেকেই ওনার প্রবল কৌতুহল আমাকে পেইন দেবার ব্যাপারে। আমার সাথে ওনার মেয়েও এই স্কুলে আবাসিক চিকিৎসকের ইন্টারভিউ দিয়েছিল। অথরিটি চাইছিল বাংলাদেশের কাউকে নিতে। ফলে তার মেয়ে রিজেক্ট হয়। এই ব্যাপারটা কেন যেন উনি সহজভাবে নিতে পারেননি।
তাই যেকোন উছিলা পেলেই উনি আমাকে জবাবদিহির উপরে রাখেন। আমিও স্বভাবে খানিকটা ঘাড় ত্যাড়া বলে নমনীয় হই না। পুরো পেশাদারিত্বের সাথে ওনাকে ডীল করে যাচ্ছি।
অর্পণের বাসায় ইনফর্ম না করতে অর্ডার এল হেড অফিস থেকে। বলা হলো ভোর পর্যন্ত না পাওয়া গেলে জানানো হবে বাসায়। ডীন আর ডর্মমাষ্টার চলে গেলেন লোকাল থানায় জিডি করতে। দেশী তিনজনপুরুষ শিক্ষক আর তিনজন হাউজ মাস্টারের একটা টিম তিনটা গ্রুপে ভাগ হয়ে সাথে সিকিউরিটি গার্ড নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে চষে ফেলতে লাগলেন। গেমস টিচার মি. জোসেফ এবং আর্ট টিচার মি. হাবিব গেলেন বয়েজ ডর্মের কোনাকানচি সার্চ করতে।
পাহাড়ি এলাকা। সাপের প্রচুর উৎপাত এখানে। সবার টেনশন হচ্ছিল মূলত এ জন্যই আরো বেশি। নার্সকে বললাম রেডি থাকেন স্নেক বাইট কেস ম্যানেজ করতে হতে পারে আজ রাতে। ওহ গড ওহ গড বলতে বলতে নার্স মি.মন্ডল ছুটলো ইনফারমারিতে।
লাউন্জেরএকপাশে সোফাতে বসে মিস. ফাতিমাকে দেখলাম দোয়া পড়ছেন। মিস. ফাতিমা কাশ্মির থেকে আমাদের এখানে এসেছেন জব করতে।কেমিস্ট্রি টিচার।তবে ওনার বড় পরিচয় হচ্ছে—– উনি ভীষন মা মা একজন মহিলা। স্টুডেন্ট তো বটেই কম বয়সী ফ্যাকাল্টি মেম্বার আমাদের যখন মন খারাপ লাগে ওনার কোয়ার্টারে চলে যাই। মজার মজার খাবার তৈরি করে খাওয়ানো, মায়ের মতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে মন ভালো করে দেন উনি। এই পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় উনি যেন এক টুকরো মা ।
ওনার পাশেই দেখলাম মিস. ফার্নান্দেজ। ঠোঁট বিড় বিড় করছেন। অবাক হলাম একটু। শুনেছি উনি নাস্তিক। কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে উনি প্রার্থনা করছেন।
ধীর পায়ে হেঁটে লাউন্জের বাইরে চলে এলাম।একাডেমিক ভবনের সামনে ফুলের ছোট বাগান।সেখানে শান বাঁধানো বসার জায়গা আছে। সেখানে যেয়ে বসলাম। ভাবছি—–কই গেল বাচ্চাটা ? এত রাতে ? এই দুর্গম এলাকা থেকে বের হওয়া তো খুব কঠিন হবে। ক্যাম্পাসের বাইরে পুরো ঘুটঘুটে অন্ধকার।
একটু পরে পাশে এসে দাঁড়ালেন মি.খান, নতুন ম্যাথ টিচার। এই মাসেই জয়েন করেছেন স্কুলে। পাটনার ছেলে। ওনার পিছনেই দেখি মিস. সাগুফতা, মার্কেটিং ইন চার্জ। অনেক বছর ধরে আছেন এখানে। হেসে বললেন—- ডক্টর আপনিও কিন্তু ফেঁসে যাবেন যদি বাচ্চাটাকে খুঁজে পাওয়া না যায়।
ভুরু তুলে তাকালাম। বললাম— তা নাহয় ফাঁসলাম।কিন্তু তাও বাচ্চাটা যেন ঠিকঠাক থাকে।
মি. খান জিঙেস করলেন— ডক্টর কেন ফাঁসবেন?উনি তো ডর্ম মাস্টার/হাউজ মাষ্টার বা সিকিউরিটি ইন চার্জ না।
মিস. সাগুফতা বললেন— ছাত্রদের মেডিকেল ফিটনেস তো ডক্টর দেয়। কোন বাচ্চা মেন্টালি স্টাবল না তা চেক করার দায়িত্ব ডক্টরের। সুস্হ বাচ্চা তো স্কুল পালাবে না এই জায়গা থেকে।
মি.খান করুন মুখে তাকালেন আমার দিকে।
আমি ঠোঁট টিপে হেসে বললাম— সমস্যা নেই সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সাথে জেলে গেলেও সময় মন্দ কাটবে না আশা করি।পুলিশ আমাকে ধরার আগে নিশ্চয়ই দায়িত্ব অবহেলা করার জন্য কাউকেই ছাড় দিবে না মিস।
রাতটা যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছিল না। দুটোর দিকে প্রিন্সিপাল বললেন— সবাই যার যার কোয়ার্টারে ফিরে যান।সকালে সবকিছুই রুটিন অনুযায়ী শুরু হবে স্কুলে ।অন্য বাচ্চারা যেন প্যানিক না হয় সেটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। হোপ টুমরো উইল বি অ্যা বিগ ডে ফর অল অফ আস। গুড লাক এন্ড গুড নাইট অল।
আর গুড নাইট !
অস্থিরতা নিয়েই ফিরে এলাম কোয়ার্টারে। অর্পণকে দেখে মনে হয়েছিল সে বেশ পছন্দ করেছে স্কুল, ডর্ম।মন খারাপ হতেও দেখিনি।এই বাচ্চা রাতের বেলাতে গায়েব হয়ে গেল ! আহারে না জানি কোথায় আছে এখন।
ঘুম আসছিল না একেবারেই । প্রিন্সিপাল ম্যামের কথা মনে করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম—- টুমরো উইল বী অ্যা বী ডে ফর অল অফ আস !
মোবাইলের এলার্মে ঘুম ভাঙল। ঝটপট মোবাইল হাতে নিয়ে মেইল চেক করলাম।না নতুন কোন আপডেট নেই।তারমানে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায় নাই অর্পণকে।
একাডেমিক ভবনে পৌঁছে দেখি এসেম্বলী শুরু হয়ে গেছে। দাঁড়িয়ে পড়লাম সিঁড়িতেই । জাতীয় সংগীত শেষ হলে জয়েন করব এসেম্বলীতে। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি— গাইতে গাইতে মনটা ভীষন আপ্লুত হচ্ছিল আজ। হঠাৎ করে চোখ পড়ল বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে। গ্রাউন্ডে মূল একাডেমিক ভবনের খানিকটা নীচে উত্তর পাশে। সিঁড়িতে দাঁড়ানো ছিলাম বলে নীচে স্পষ্ট দেখতে পারছিলাম। গ্রাউন্ডের বসার বেঞ্চে অর্পণ শুয়ে আছে। পাগলের মতো চিৎকার দিয়ে উঠলাম আমি—– অর্পণ অর্পণ আই গট হিম ! এক দৌঁড়ে ছুটলাম বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে। হুঁশ নেই যে জাতীয় সংগীত হচ্ছে। অন্যরা চমকে গেলেও সবাই এসেম্বলীতে দাঁড়িয়েই রইলো। কারন আমাদের বাচ্চাদেরকে শেখানো হয়— ডিসিপ্লিন কামস ফাস্ট।
আমি পারিনি। আমার কাছে ডিসিপ্লিনের বহু আগে হিউম্যানিটি।
ছুটে এসে গাঁয়ে হাত দিয়ে দেখি গা পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্যরাও এলেন। হেলথ সেন্টারে তুলে আনা হলো অর্পণ কে। বিপি লো । পালস খুব ফার্ষ্ট , টেম্পারেচারও অনেক বেশী। সেন্সলেস হয়ে আছে। সারা রাত বাইরে খোলা জায়গায় থাকায় বুকে কফ জমে গেছে। নিউমোনিয়া হবার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।তার উপরে পাহাড়ি এলাকা। ম্যালেরিয়ার কথা বাদ দেয়া সম্ভব না।
চ্যানেল ওপেন করে ফ্লুইড স্টার্ট করলাম। হেড অফিসে এরমধ্যেই মেইল পাঠিয়েছি হেলিকপ্টার পাঠানোর জন্য। দ্রুত ঢাকাতে শিফট করতে হবে অর্পণকে। পনেরো মিনিটের মধ্যে চলে এলো চপার। যেহেতু লোকালয় থেকে অনেকটা দূরে তাই আমাদের এখানে বাচ্চাদের ইমার্জেন্সির জন্য আমাকে ইন্সট্রাকশন দেয়া ছিল হেলিকপ্টারের কল করার। গত তিন বছরে যদিও একবারের জন্য দরকার হয়নি হেলিকপ্টার। আমিই আমার হেলথ টিম নিয়ে ম্যানেজ করতে পেরেছি সবগুলো কেস।আজ রিস্ক নেয়া ঠিক হবে না পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম।
অর্পণকে স্ট্রেচারে থেকে যখন হেলিকপ্টারে তুলছিল তখন দেখি আমার মোবাইলে মেইল এল— “ডক্টর, ইউ ব্রোক টু রুলস টুডে।ডিউরিং ন্যাশন্যাল এন্থাম ইউ রান ইনফ্রন্ট অল এন্ড উইদাউট মাই পারমিশন ইউ আর সিকিং ফর হেলিকপ্টার।
—প্রিন্সিপল”
ঠোঁটে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে হেলিকপ্টারে অর্পণের পাশে উঠে বসলাম। দু একটা শোকজ খাবার থেকেও আমার জন্য অনেক জরুরী এই মুহুর্তে বাচ্চাটাকে বাঁচানো।
দ্যাটস ইট।
মিম মি
Photo by Feliphe Schiarolli on Unsplash