ডেয়ার টু বি ডিফ্রেন্ট

ডেয়ার টু বি ডিফ্রেন্ট

এই পৃথিবীতে কেউ ইচ্ছে করে অফ ট্রাক লাইফ কাটায় না,ইচ্ছে করে কেউ নষ্ট হয়ে যায় না।
কিন্তু সেসব গল্প কেউ জানতে চায় না, কখনোই…..
_______________________________________

চারজন সমকামী মেয়ের সাথে প্রায় নিয়মিতই
কথা হয় আমার। না না চোখ গোল গোল করবেন না প্লিজ, আমি straight ☺। দুজন গে আছেন তাদের সাথেও কথা বলি কখনো কখনো। ‘আপু আপু’ বলতে বলতে কখন যে ওরা ভাই হয়ে গেছে টেরই পাইনি।
ট্রেন্সজেন্জারও আছেন কয়েকজন যারা হুটহাট নক করেন। আহুর খবর নেন।

আবার পরোকীয়া করছেন এমন কয়েকজনের সাথেও কথা বলা হয়েছে আমার। জামাইর সাথে জিদ করে জড়িয়ে পড়েছেন অন্যের সাথে কিন্তু এখন আর ফিরতে পারছেন না একজন ভীষন প্রমিজিং লেডি ডক্টর । আবার বৌয়ের পরোকীয়ার প্রতিশোধ নিতে যেয়ে কাজিনের সাথে জড়িয়ে জটিল পারিবারিক জীবন কাটাচ্ছেন একজন কর্পোরেট বিগশর্ট ।তারা যখন একেবারেই অপরিচিত এই আমাকে ফেসবুকে খুঁজে পেয়ে ভেজা গলায় কনফেস করেন তখন আমিও চোখে ঝাপসা দেখতে থাকি।

বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের প্রফেশনাল পরীক্ষাগুলোতে পিছিয়ে পড়া বহু ছেলে মেয়েগুলোর সাথে খুবই ভাব ভালোবাসা আমার। যারা নিয়মিত পাশ করে তাদেরকে তো সবাই ভালোবাসে।কিন্তু আমার কেন যেন মনে হয় পিছিয়ে পড়া ছেলে মেয়েটি বরং বেশী ডিসার্ভ করে একটা টাইট হাগ।

রাগ হবেন না এখুনি প্লিজ আমার উপর এসব আবোল তাবোল লিখছি বলে ।তাতে আপনার রক্তের চাপ ই বেড়ে যাবে।আমার কিচ্ছুটি হবে না। আমি তো লিখব ই। লিখে কিছু হবে কিনা জানি না। তবে আমাদের এই সময়টাকে যে ধরে রাখা যাবে সেটা নিশ্চিত জানি।

তো যা বলছিলাম বিশ্বাস করুন আমার না ওদেরকে(উপরে যাদের কথা বললাম) অচ্ছুৎ মনে হয় নাই কখনো।
মানুষ ই মনে হয়ছে। পরিবেশ,পরিস্থিতি এবং অবশ্যই কপাল ওদের জীবনকে আলাদা করেছে আমার/আপনার থেকে; ব্যাস এতটুকুই পার্থক্য।

মেডিকেল সায়েন্সে লেখাপড়া করাতে সবাইকে কেন যেন রোগী মনে হয় আমার।তাই কেউ যখন তার শরীর কিংবা মনের কোন কষ্টের কথা আমাকে বলে আমি পাক্কা প্রফেশনালদের মতো করে পুরো হিস্ট্রিটা শুনি।
তবে এখানে একটা সমস্যা হয়। যেহেতু লেখালেখি আমার একমাত্র প্যাশন। ভীষন ভালোবেসে এই কাজটা আমি করি।তাই জীবনের গল্প পেলেই আমি আমার তৃতীয় নয়নকে খুলে দেই। গল্পগুলো শুনতে শুনতে আমি চেষ্টা করে ঐ সময়টাকে দেখতে,অনুভব করতে। কেমন যেন একটা ঘোরের ভেতরে চলে যাই আমি। সেই সাথে ব্যক্তি জীবনে যেহেতু আমি এক সময়ে sufferer দের দলে ছিলাম তাই কোন না কোন ভাবে যারা পারিবারিক, সামাজিকভাবে হেয় অবস্থায় থাকেন তাদের প্রতি আমার মন অটোমেটিক ই কানেকশন ফীল করে।

বিশ্বাস করুন— এই পৃথিবীতে কেউ না ইচ্ছে করে অফ ট্রাক লাইফ কাটায় না, ইচ্ছে করে কেউ নষ্ট হয়ে যায় না।
পরিবেশ,পরিস্থিতি এবং অবশ্যই কপাল বদলে দেয় মানুষকে।

আমরা যারা ধর্ম বিশ্বাস করি তারা তো মানি আমাদের জীবনে সেটাই ঘটবে যেটা সৃষ্টিকর্তা চাইবেন, তাই না?
তাহলে যুক্তি হিসেবে তো বলাই যায়—- একজন মানুষ straight/গে/লেসবিয়ান হবে নাকি ডিভোর্সড/বিধবা হবে নাকি পরোকীয়া করবে অথবা পরীক্ষায় ফেল করবে, মদ গাঁজা ইয়াবা নেশা করবে,মানুষ খুন করবে,রেপ করবে ইত্যাদি সব নেতিবাচক কাজই তো পূর্ব নির্ধারিত হবার কথা।
(আমার চৌদ্দ গুষ্টি এইবার উদ্ধার হবে জানি)

হুমমম জানি বিধাতা মানুষকে বিবেক বিবেচনা দিয়েছেন।ভালো মন্দ বিচার করে গ্রহণ করবার সুযোগ আমাদের আছে।কিন্তু ভালো আর মন্দ কি সব সময়ই constant? সময়ের সাথে কি ভালো মন্দের বিষয়টা বদলে যায় না অনেক সময়ই? পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষী সময়ের সাথে ভালো মন্দের আপেক্ষিকতা নিয়ে।
একটা কনসেপ্ট নতুন বলেই তাকে নেতিবাচক ই ধরে নিতে হবে এটা কেন যেন মানতে ইচ্ছে করে না।সমাজ কখনোই নতুন কিছুকে শুরুতে সাদরে গ্রহণ করে না এটা তো আমরা জানিই।কিন্তু সময়ের সাথে গ্রহণীয় হতেও তো দেখেছি বহু ইস্যু যা পরবর্তীতে মানব কল্যাণে ঠিক কাজে এসেছে।

আমি বলছি না গে/লেসবিয়ান/পরোকীয়া/ডিভোর্স/
পরীক্ষায় ফেল করাকে স্বাগতম জানাতে। আমি শুধু ভাবতে বলছি—– একজন মানুষকে গালি দেবার আগে,সবাই মিলে কোনঠাসা করার আগে,অচ্ছুৎ বলার আগে আমরা যারা নিজেদেরকে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে ভাবছি তারা আর একটু বিবেচনা করি,মানবিক হই।

অবশ্য আমিও so called হিসেবে স্বাভাবিক মানুষ নই মোটেও ।
But who cares 😉😋
I love my flawless Life 😍
.
ডেয়ার টু বি ডিফ্রেন্ট

#মিম্ মি

Related posts

Leave a Comment