দেশে বেকার বা সরকারী চাকুরি করতে আগ্রহী চিকিৎসকের সংখ্যা কতো?
৩৯ তম বিসিএস দিতে ইচ্ছুক এবং ইতিমধ্যে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন ৪০ হাজার বেকার চিকিৎসক।
দেশে বেকার বা সরকারী চাকুরী করতে আগ্রহী এমন চিকিৎসকের সঠিক সংখ্যাটা অনুমান করুন। এরসাথে প্রতি বছর পাস করে আরো ১০,০০০ জন যোগ হবে। এই বারে ৪,৫০০ জন জয়েন করলেও দেশে বেকার ডাক্তারের সংখ্যা কত হবে আর কত হতে থাকবে তা ভাববার বিষয়।
এই টোটাল প্রক্রিয়া একদিনে হয়নি।
একটি স্লো পয়জনিং বা নিয়ম নিতিহীন গেম এ পড়ে গেল এই দেশের সবথেকে মেধাবী ছাত্র ছাত্রী গোষ্ঠী।
এই চিকিৎসক সংখ্যা বিস্ফোরন প্রক্রিয়ায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মেধাবী মেয়েরা। মেধাবী ছেলেরা অনেকেই পরিবারের চাপকে উপেক্ষা করে মেধাবী মানেই চিকিৎসক হবে,কিছুটা হলেও এই ভাবনার বাইরে যেতে পেরেছিলেন।
কিন্তু,নব্বইয়ের দশকে এমন একটা ট্রেন্ড চলছিল যেন মেধাবী মেয়ে মানেই তাকে চিকিৎসক হতেই হবে।ঐ সব সময়ে সব ভালো স্কুল কলেজের প্রথম সারির ৯৫ % মেয়েরা চিকিৎসক হয়েছেন।পরবর্তীতে ডাক্তারের সংখ্যা বিস্ফোরন কেন ঘটেছে তা কারো অজানা নয়।
এই ধরনের অগা বগা অগী বগী সবাই চিকিৎসক হবেন এমন সুদিন অপেক্ষমান জানলে ঐ ক্লাস টপার মেয়েরা ক্যারিয়ার নিয়ে ভিন্ন ভাবনা ভাবতে পারত! ছেলেদের সাথে প্রতিযোগিতা করেই সব প্রফেশনে নিজেদের মেধার স্বাক্ষর রাখতে পারত। দেখলাম, এডমিন ক্যাডারে নারী মাত্র ৭ %
অনেক সংস্কৃতিমনা,প্রগতিশীল,নেতৃত্বদানকারী মনোভাবের মেয়েরা কেবল সামাজিক কাঠামোর চাপে পরে, ডাক্তারীতে চান্স হবার সুবাদে চিকিৎসক হয়েছেন।অথচ এই মেধাবী মেয়েরাই দখল করতে পারত এডমিন,পুলিশ কিংবা প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের ক্ষমতাবান চেয়ারগুলো।
ক্ষমতাবান নারীগোষ্ঠীর বদলে জাতি পেল হতাশ,দুঃখী নারীগোষ্ঠী (আমার ফেসবুকের নিউজ ফিডের চিকিৎসকদের পোষ্টের ধরন দেখে মনে হয়েছে)!
অথচ ডিসেন্ট প্রফেশন খ্যাতি দিয়ে সব মেয়েদের মাথায় ডাক্তারীর ভূত চাপিয়ে দিয়ে বাবা মা কন্যা সন্তানদের স্বচ্ছল সম্মানিত জীবনের স্বপ্ন দেখেছেন।
একমাত্র কারন – সংখ্যা বিস্ফোরন আজ চিকিৎসকদের চরম অসম্মানের জীবন যাপনে বাধ্য করতেছে।
এই অসম্মান আরো বাড়বে।
তাই বঙ্গদেশের নবীন পুত্র কন্যারা আর তাদের অভিভাবক গন বেকার ডাক্তারের সংখ্যাটা দেখুন।এবার অন্তত ভেবে চিন্তে ভবিষ্যৎ পেশা নির্বাচন করুন।
নইলে অদূর ভবিষ্যতে মাছের বাজারে,সবজির আড়তে,পার্লারে,দোকানে,সুপার শপে পেটে ভাতে চাকরী করছেন এমবিবিএস চিকিৎসক – এমন ঘটনা দেখলে অবাক হবো না।
ডা শিরীন সাবিহা তন্বী