সমস্যা ঃ
“কোন ভাবেই আলাদা থাকতে পারি না আবার এক সাথে থাকা ও দুঃসাধ্য হয়ে যাচ্ছে”
রেজার সাথে আমার সম্পর্ক দেড় বছর। লয়ালটি, ফিলিংস, ট্রাস্ট সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরেও রেগুলার ঝামেলা হচ্ছে।
অনেক বার ব্রেক আপের চেষ্টা করেছি আমরা। কোনভাবেই আলাদা থাকতে পারি না।
আবার একসাথে থাকাও দু:সাধ্য হয়ে যাচ্ছে।
ওর দাবী আমি ওকে বুঝি না,আমি ওর কথা বলার সময় ইন্টারাপ্ট করি প্রচন্ড লোনলিনেসে ভোগে আর আমার দাবী ও আমাকে প্রায়োরিটি দেয় না।
ওকে কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখলেও আমি সহ্য করতে পারি না। একটু কিছু হলেই চিল্লাপাল্লা করি। ও কখনো ঠিক টাইমে কোথায় আসতে পারে না। কোনো একটা প্ল্যান করলে সেটা সবসময় ফেইল্ড হয় ওর নির্লিপ্ততার জন্য। আমি সহ্য করতে পারি না। আমার মনে হয় আমাকে ইগ্নোর করা হচ্ছে নইলে একটা মানুষের কেন প্রত্যেকটা ইভেন্টেই একই রকম হবে?
রাগের মাথায় যা মুখে আসে বলে ফেলি। কন্ট্রোল করতে পারি না। আমার জিদ রাগ বাড়ছেই। আমি সম্ভবত আমি বর্ডার লাইন পার্সোনালিটি তে ভুগছি। দিনদিন সমস্যা বাড়ছেই।
সমাধান বা পরামর্শ ঃ
তোমার সমস্যার ধরনটি বোঝা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বেশীরভাগ দাম্পত্য সমস্যা বা প্রেমের সম্পর্কে দ্বন্দ্ব, সংঘাত,বিরোধের যে কমন চিত্র তা তোমার লেখায় স্পস্ট হয়েছে।
সবাইকে মনে রাখতে হবে শুধু প্রেম, ভালোবাসা, ফিলিংস, বিশ্বস্ততা বা ট্রাস্ট থাকলেই সম্পর্ক মধুর হয় না।
আমি এমন অনেক দম্পতির কাহিনী জানি যারা গভীর ভালোবাসা থাকা সত্বেও চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গির অমিলের কারনে নিত্য ব্যক্তিত্বের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে বহু বছর পর ডিভোর্স নিয়েছে।
অথচ প্রফেশনাল কাউন্সিলিং নিয়ে তারা নিজেদের ব্লাইন্ড এরিয়াগুলো জেনে নিয়ে সমঝোতায় আসতে পারতো।
একগুঁয়েমি করে তারা সারাজীবন অসুখী জীবন যাপন করে থাকে।
তোমাদের সমস্যা গুলো যে খুব বড় বা জটিল তা নয়। কিন্তু মূল সমস্যা হচ্ছে অভিজ্ঞতা,ম্যাচুরিটি ও এডজাস্ট করার ক্ষমতার অভাব। ব্যক্তিত্বের ম্যাচিং গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে থাকতে হবে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অভিযোজন ক্ষমতা।
সে আমাকে গুরুত্ব দেয় না, ইগনোর করে, সময় মত আসে না-
এসব অভিযোগ অল্প বয়সী ছেলে মেয়েদের কমন অভিযোগ।
আবার এসব কারনে অভিমান করা, জিদাজিদি করা আবেগীয় ইমম্যাচুরিটির লক্ষণ।
নিজেরা যদি এরকম তুচ্ছ সমস্যার সমাধান করে বিবাদ,সংঘাত না কমাতে পারো,তাহলে তোমাদেরকে প্রফেশনাল কাউন্সিলিং নিতে হবে।
একই কথা সব দম্পতি ও প্রেমিক প্রেমিকাদের যারা মনে করছে এতো ভালোবাসি, সমঝোতার এতো চেষ্টা করছি তবুও সংসারে/ জীবনে সুখ পেলাম না, এক সঙ্গে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে-
তাদের জেনে রাখা দরকার
এসব ক্ষেত্রে নিজেরা, বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয়দের পরামর্শে পরিস্হিতির খুব একটা উন্নতি হয় না।
তাদের প্রয়োজন প্রফেশনাল কাউন্সিলিং।
কেননা নিজেদের চিন্তা ধারা,দৃষ্টিভঙ্গি, মনন,স্বভাব বদলানোর কৌশল শুধু অভিজ্ঞ মনোচিকিৎসক বা মনোবিদরাই করতে পারেন।
তোমরা ও সুখে থাকবে এই শুভ কামনা করছি
প্রফেসর ডা. তাজুল ইসলাম
সোশাল সাইকিয়াট্রস্ট
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
কমিউনিটি এন্ড সোশাল সাইকিয়াট্রি বিভাগ
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল,ঢাকা
e- mail: drtazul84@gmail.com
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ফারিয়া ইসলাম বৃষ্টি
Hi there to every one, the contents existing
at this web site are truly remarkable for people knowledge, well, keep up the nice work fellows.