কর্মক্ষেত্রে সুস্থ থাকার সহজ উপায়

একটা কোম্পানীর বা প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে তার কর্মকর্তাদের উপর। আর কর্মকর্তাদের সুস্থতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। কর্মক্ষেত্রে সুস্থ থাকতে হলে, প্রথমে জানতে হবে সুস্থ থাকার নিয়মাবলী এবং বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়।
বড় বড় অফিস আদালতের কর্মকর্তাদের সাধারনত যে শারীরিক সমস্যাগুলো দেখা যায় তা হলোঃ-

 ঘাড়ে এবং কোমরে/মাজায় ব্যথা,
 চোখে ব্যথা,
 মাথা ব্যথা,
 ক্লান্তিভাব
 দুশ্চিন্তা,
 মানসিক অস্থিরতা,
 পারিবারিক এবং চাকরি জীবনে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা।

শরীর যদি সুস্থ থাকে তাহলেই একমাত্র সম্ভব কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সাফল্য অর্জন করা।
নিম্নলিখিত নিয়মগুলো যদি দৈনন্দিন জীবনে মেনে চলা যায়, তাহলে উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো থেকে নিজেকে ভালোরাখা সম্ভব।ভালো থাকতে হলে যা কনীয়ঃ-

 চেয়ারে বসতে হবে সোজা হয়ে একটানা বসে কাজ করা যাবে না। প্রতি এক ঘন্টা অন্তর অন্তর নিজ স্থানেই চেয়ার থেকে উঠে
দাড়াতে হবে অন্তত ৫ মিনিট । তাহলেই ঘাড়ে ব্যথা এবং কোমরের ব্যথা থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাবে।

 কম্পিউটার বা লেপটপে কাজ কারার সময় নিজের চোখের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। চোখের উপর যেন বেশি চাপ না পড়ে
সেজন্য একটা নিয়ম আছে আর তা হলো ২০-২০-২০ অর্থ হচ্ছে প্রতি ২০ মিনিটে অন্তর অন্তর , ২০ ফুট দূরে , ২০ সেকেন্ডের
জন্য তাকাতে হবে চোখের বিশ্রামের জন্য। চোখের ব্যথা থেকেই অনেক সময় মাথা ব্যথা হতে পারে।

মাথাব্যথা , ক্লান্তিভাব , দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে হলে যা খুব সহজেই করা যায় তা হলোঃ

 সহজভাবে চিন্তা করতে হবে সবকিছু,

 নিজেকে কোন ঝামেলায় না জড়িয়ে, কিভাবে সমস্যার সহজ সমাধান করা যায় তা নিয়ে একটু সময় নেওয়া,ধৈর্য্য ধারন করে
পরিকল্পনা করা।

 নিজের কর্মদক্ষতা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে চলা,

 নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজের কাজগুলো ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা,

 ছুটির দিনগুলোতে বিশ্রাম করা এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়া,

 অফিসে লিফট এর পরিবর্তে সিড়ি ব্যবহার করতে হবে এবং দৈনিক ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করতে হবে,

 প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তৈলাক্ত এবং অতিরিক্ত মসলা দিয়ে রান্না করা খাবারও নানা
ধরনের শারীরিক অসুস্থতার কারণ,

 শরীরের ওজন যদি সাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়, তাহলেও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এমনকি হৃদরোগের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

 নিয়মিত খাবার খেতে হবে। সকালের নাস্তা হতে হবে সাস্থ্যসম্পন্ন এবং তা কখনও বাদ দেওয়া যাবে না এবং প্রতিদিন ২- ৩ লিটার
পানি পান করতে হবে।

 দৈনিক অন্তত ৬-৭ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ঘুম ভালো না হলে কাজের চাপে শরীর খারাপ লাগতে পারে।

 অতিরিক্ত চা বা কফি এর পরিবর্তে প্রচুর পানি পান করলে নিজেকে সতেজ মনে হবে এবং কাজ করার জন্য যথেষ্ট উৎসাহ
পাওয়া যাবে।

 ধুমপান থেকে নিজেকে বিরত রাখলে নানাবিধ সমস্যা থেকে নিজেকে সহজেই রক্ষা করা যায়।

সবসময় হাসি খুশি থাকতে পারাটাও একটা যোগ্যতা। এটাই সত্য যে সুস্থ কর্মকর্তাদের নিয়েই একটা সুপ্রতিষ্ঠিত কোম্পানী গড়ে ওঠা সম্ভব। সাস্থ্যবিষয়ক নিয়মাবলী সব মেনে চলার পরেও যদি কোন রকম অসুস্থতা বোধ করেন, তবে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


ডাঃ নূরুন্নাহার
এম.বি.বিএস; এম.পি.এইচ
অকুপেশনাল হেলথ কনসালটেন্ট
গ্রামীনফোন লিঃ
বসুন্ধরা,বারিধারা,ঢাকা

Related posts

Leave a Comment