সুন্দরী প্রতিযোগিতার মানদণ্ড আসলে কি ?
আমাদের দেশে সুন্দরী প্রতিযোগিতার মানদণ্ড আসলে কি ?
গায়ের রং সাদা হতে হয় ?
ব্রেইন অব্যবহৃত থাকতে হয় ?
বিকৃত উচ্চারণে বাংলা এবং অশুদ্ধ ইংরেজি বলতে জানতে হয় ?
নাকি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল সমৃদ্ধ একটা নারী দেহের মালিক হতে হয় ?
সিরিয়াসলি জানতে চাই কিসের ভিত্তিতে সুন্দরী প্রতিযোগিতা গুলোতে নারীরা নির্বাচিত হয়ে প্রাথমিক রাউন্ড থেকে ফাইনাল পর্যন্ত আসছেন ?
H20 (2 আরো একটু নীচে হবে H এর।কিন্তু আমার মোবাইলে অপশনটি নেই।) মানে পানি না বলে যারা বলেন ‘এটা ধানমন্ডির একটা রেস্টুরেন্টের নাম’ তাদের মতো বুদ্ধিহীন মেয়েরা কিভাবে সুন্দরী হন ? আবার এরাই নাকি বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন। আই মিন সিরিয়াসলি !!!
আসলেই কি এসব বোধহীন, দেহ সর্বস্ব, বুদ্ধিশূণ্য, কার্টুন টাইপ মেয়েগুলা রিপ্রেজেন্ট করে বাংলাদেশের মেয়েদেরকে ?
যারা শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা পর্যন্ত বলতে পারেন না ।
কই আমার আশেপাশে তো এমন মেয়ে আমি দেখি না।
আমার সহকর্মী, বন্ধু, সিনিয়র জুনিয়র অধিকাংশ ই ডাক্তার বা সমান শিক্ষিত নারী। যারা সমাজের তেজোদীপ্ত উজ্জ্বল সব নারী। তারা এক হাতে নিজের পেশা সামলে অন্য হাতে ঘর সংসার তো করছেনই।পাশাপাশি অনেকেই বহু সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কাজের সাথেও প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত।
ডাক্তার হবার বদৌলতে সমাজের বহু শ্রেণীর নারীদেরকেও খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। নিন্মবিত্ত গার্মেন্টস ওয়ার্কার, গৃহ কাজে সাহায্যকারী মেয়েটির মাঝেও দেখেছি প্রবল আত্মবিশ্বাসের সৌন্দর্যে কর্মের মধ্যে দিয়ে টিকে থাকার প্রত্যয়।
উচ্চ শিক্ষিত নারীটিকে দেখেছি সন্তান এবং পরিবারের জন্য নিজের ক্যারিয়ার, স্বপ্ন ত্যাগের বিনিময়ে একটা আদর্শ পরিবারকে তৈরি করতে পরম যত্নে। তাদের এই আত্মত্যাগের ভেতরে যে সৌন্দর্য তা কি আর শরীর প্রদর্শনের মাধ্যমে হয় ?
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বহু নারী কাজ করছে বিভিন্ন মেলা থেকে বিপনি বিতানগুলোতে, টিউশনির টাকায় তারা প্রেম করে না। বরং বাবা মায়ের পাশে দাঁড়ায়।
কত শত নারীকে জানি সন্তান নিয়ে একা একা জীবন যুদ্ধটা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদের কাউকেই দেখি না শুধুমাত্র নারী বলেই বুদ্ধি,বিবেক, শিক্ষার ব্যবহার না করে শুধুমাত্র নারীর দেহকে পণ্য সাজিয়ে নিজের সম্মানকে ভূলন্ঠিত করতে। আমরা নিজেরাই যদি নিজেদেরকে সম্মান করতে না শিখি অন্যের কি দায়িত্বে পড়েছেন আমাদেরকে সম্মান দিতে?
এই ভান হীন, মেকাপ ছাড়া, ঘামে জর্জরিত, স্নিগ্ধ মুখোচ্ছবির এরাই মূলতঃ প্রতিনিধিত্ব করে এদেশের নারী সমাজকে।
দেশের প্রথম নারী মেজর জেনারেল একজন চিকিৎসক। গতকাল এই খবরটা শুনে এত আনন্দ হলো। পাকিস্তান কে 17 গোল দিল বাংলাদেশ নারী ফুটবল টিম। এটা জেনেও একরাশ ভালো লাগায় মন ভরে গেল। আমার দেশটা ভরে উঠুক এমন হাজারো বুদ্ধিদীপ্ত, মেধাবী,সৎ, পরিশ্রমী, দক্ষ, সুন্দরী এবং মায়াবতী সব নারীতে ।
#মিম্ মি
Photo by Kris Atomic on Unsplash