একই তেলে বারবার রান্না করা কতোটা স্বাস্থ্যকর ?।।পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দীকা

পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দীকা

একই তেলে বারবার রান্না করা কতোটা স্বাস্থ্যকর ?

একই তেলে বারবার রান্না করলে স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা থাকে।
খরচ বাঁচাতে কিংবা অপচয় ঠেকাতে অনেকেই একবার ব্যবহার করা তেল কয়েকবার ব্যবহার করেন। তবে বিষয় হল এটা করতে গিয়ে শরীরের ক্ষতি হচ্ছে না তো!

পোড়া তেল ব্যবহার করলে যা হয়

পোড়া তেল কিংবা একবার চুলোয় চড়ানো তেল আবার রান্নায় ব্যবহার করলে মুক্ত মৌল তৈরি হয়। এই মুক্ত মৌল শরীরের স্বাস্থ্যবান কোষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সৃষ্টি করতে পারে প্রদাহ এবং রোগ। মুক্ত মৌল থেকে ‘কারসিনোজেনিক’ তৈরি হতে পারে, অর্থাৎ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এছাড়াও হতে পারে ‘অ্যাথেরোসক্লেরোসিস’, ফলে বাড়তে পারে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল যা ধমনিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।

এসব মারাত্বক সমস্যার থেকে বেঁচে গেলেই শেষ নয়, আছে নানান ছোটখাট সমস্যা। অ্যাসিডিটি, বুক জ্বালাপোড়া, হৃদরোগের ঝুঁকি, আলৎঝাইমার’স রোগ, পার্কিনসন’স রোগ, গলায় অস্বস্তি এদের মধ্যে অন্যতম।

কতবার তেল পুনর্ব্যবহার নিরাপদ?

স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি অপচয় এবং খরচ কমানও জরুরি।

ডুবো তেলে কোনো কিছু ভাজতে যে তেল ব্যবহার করা হয়েছে তা পুনরায় অন্য কাজে ব্যবহার না করাই উচিত। তবে তেলের ধরন, কতক্ষণ ধরে গরম করা হয়েছে, তা ব্যবহার করে খাবার কী মাত্রায় ভাজা হয়েছে এবং কী খাবার তৈরি করা হয়েছে এসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কিছু ক্ষেত্রে তা আবার ব্যবহার করা যেতেও পারে।

পোড়া তেলের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে

– রান্নার পর অবশিষ্ট তেল ঠাণ্ডা করে বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। পাত্রে ঢালার আগে তা ছেঁকে নিতে হবে। এতে তেলের মধ্যে খাবারের অবশিষ্টাংশ অপসারিত হবে, যা তেলটুকুকে দ্রুত নষ্ট করতো।

– পোড়া তেল পুনরায় ব্যবহারের আগে এর রং এবং ঘনত্ব পরীক্ষা করতে হবে। তেলের রং যদি গাঢ় হয়ে যায়, স্বাভাবিকের চাইতে বেশি ঘন এবং আঠালো হয় তবে তা ব্যবহার করা যাবে না, ফেলে দিতে হবে।

– পোড়া তেল আবার গরম করতে গেলে যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ধোঁয়া হয় তবে ওই তেল বাতিল করতে হবে। কারণ ওই তেলে জমেছে ‘এইচএনই’ নামক বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান যা বিভিন্ন অসুখ বয়ে আনতে পারে।

মনে রাখতে হবে

সব তেল এক নয়। কিছু তেল থেকে দ্রুত ধোঁয়া হয়, যা ডুবো তেলে কোনো কিছু রান্নার জন্য আদর্শ। এই তেলগুলো উচ্চ তাপামাত্রায় সহজে ভাঙে না। যেমন- সূর্যমূখীর তেল, সয়াবিন তেল, রাইস ব্র্যান অয়েল, তিলের তেল, বাদামের তেল, সরিষা এবং কানোলা’র তেল।

জলপাই বা অলিভ অয়েল থেকে ধোঁয়া হয় অনেক দেরিতে তাই এই তেল দ্বিতীয়বার ব্যবহার না করাই ভালো। হালকা ভাজি করার ক্ষেত্রে এই তেল ব্যবহার করতে হয়, উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন এমন রান্নায় এই তেল ব্যবহার করা উচিত নয়।

 

পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দীকা

বি.এস.সি, এম.এস.সি, (ফুড এন্ড নিউট্রিশন, ঢা.বি.)

কনসাল্টেন্ট ডায়েটিশিয়ান ইজি ডায়েট

এক্স চীফ ডায়েটিশিয়ান স্কয়ার হসপিটাল লি.

এক্স ডায়েটিশিয়ান এপোলো হসপিটাল

চেম্বারঃ

জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ মেডিক্যাল সার্ভিসেস লি.

মোবাইলঃ ০১৮২২২৫৯৪১১

Related posts

Leave a Comment